Daffodil College Alumni Students(Fazlay Rabbi Shuvo)

সুদূর চীনের Yunnan University তে Software Engineering এর স্বপ্ন পূরণের পথে আমাদের শুভ

ফজলে রাব্বি শুভ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজের ২০১৬ – ২০১৭ সেশনের একজন ছাত্র। বর্তমানে  চীনের একটি পাবলিক ইউনিভার্সিটি তে ( Yunnan University, Kunming, China ) সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং- এ লেখাপড়া করছে।

২০১৮ সালে এইচএসসি পাশ করার পরে, বাংলাদেশ থেকে চীনে পৌঁছানোর গল্পটা শুভর মুখ থেকেই শোনা যাক্:

‘আমার মতে, বর্তমান কে মনে করে অতীত কে ভুলে যাওয়া মোটেও উচিত না। DIC-

তে আমার কাটানো সময় টা শুধু ২ বছর হলেও এটা ছিলো আমার দ্বিতীয় হোম।’ শুভর কলেজ লাইফটা ছিলো একটু অন্যরকম।

সে বলেছে ‘রোজ সকালে সবার আগে এখানে আসাটা প্রায় আমার একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। যখন কলেজের গেইটও খুলতো না; আমি শুভ হাজির হয়ে যেতাম আমার প্রিয় প্রাঙ্গণে। সেই ভোর ৬ টায় এসে ক্লাস শেষ করে, বাসায় যেতাম সন্ধ্যা ৬ টায়। দিনের বেশিরভাগ সময় এখানে কাটত আমার,ঠিক আমার বাসার মতো।‘

এছাড়াও এখানকার স্যার, ম্যাডামরা ফ্যামিলি মেম্বার থেকে কোনো অংশে কম ছিলেন না। কোন কোন শিক্ষককে দেখে ভয় পেতাম; পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিখতে ভুল করলে বকাঝকা যেমন খেয়েছি, সঠিক লিখার জন্য প্রশংসাও পেয়েছি। শিক্ষাগুরু তো এমনই হয়।’

শুভর বিদেশে পড়তে যাওয়ার পেছনে নিজের ইচ্ছা, বাবা-মাযের উৎসাহের পাশাপাশি শিক্ষকবৃন্দের সহযোগিতার কথাও সে ভুলে যায়নি। এই প্রসঙ্গে শুভ বলে:

‘তাদের সাথে সব ধরণের সমস্যার কথাই প্রকাশ করা যেত, হোক লেখাপড়ার বিষয়, কিংবা  ফিনান্সিয়াল কোনো ব্যাপারে,আবার হয়তো পার্সোনাল লাইফ এর কোনো ব্যাপারে। উনারা সব সময় আমাদের কে ঠিক পরামর্শ টা দিতেন । তাদের সঠিক পরামর্শ এবং তাদের এত ফ্যামিলিয়ার একটা পরিবেশ পেয়েই আমার আজ এত ভালো একটা ভার্সিটি তে এত ভালো একটা সাবজেক্ট এ পড়ালেখা করার সুযোগ হয়েছে।।

চায়না যাওয়ার গল্পটা ছিল এরকম-

‘চায়নাতে যাওয়ার আগে অনেক বাঁধাই সামনে এসেছিল তার মধ্যে একটা ছিল ভিসার জন্য এম্ব্যাসিতে দাঁড়ানো।  এম্ব্যাসি সকালবেলা খুললেও ভিসার জন্য বাইরে লাইন লেগে থাকত রাত থেকেই। কারণ,  চায়নাতে ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার জন্য সেশন থাকে শুধু মাত্র দুইটা মার্চ  এবং সেপ্টেম্বরে, এজন্য এই  সময় অনেক ভিড় থাকে | আমার মনে আছে,  রাত বারোটা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে  সকাল ১১ টার সময় ভিসার জন্য এ্যাম্বাসিতে ঢুকতে পেরেছিলাম। চায়নাতে যেয়ে লেখাপড়া করতে পারব বলে আমার কাছে এসব বাধাকে  কিছুই মনে হলো না।’

‘আমার ভার্সিটি Yunnan  প্রভিন্স এ; এটাকে বলা হয় সিটি অফ ফ্লাওয়ার ( City of Flower)

কারণ, এই জায়গাটা চায়নার অন্য জায়গার তুলনায় অনেক সুন্দর । এছাড়া এখানকার আবহাওয়াটা না ঠান্ডা না গরম , অর্থাৎ নাতিশীতোষ্ণ, বাংলাদেশের মতো। এজন্য এখানে থাকতে আমাদের তেমন কোন সমস্যা হয় না ।’

এটা খুবই ইতিবাচক একটা দিক এবং ইউনিয়ন প্রভিন্স এর মধ্যে বেস্ট ভার্সিটি হলো Yunnan University. এখানে চান্স পাওয়াটা আসলে এক ধরনের ভাগ্যের ব্যাপার । তার উপরে সাবজেক্ট হলো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং যা কম্পিউটার সাইন্স থেকে অনেকটা আলাদা এবং তুলনামূলক নতুন |

ভার্সিটি লাইফ নিয়ে  শুভ যেমনটা বলেছে:

‘চায়নাতে ভার্সিটি জীবনটা মোটামুটি ঝামেলা মুক্তভাবে কেটে যায় রোজ । দিনে ২ থেকে ৩ ঘন্টা ক্লাস থাকে বাকি সময়টা আমরা বিভিন্ন কাজে ব্যয় করি ।

সেটা হতে পারে লাইব্রেরীতে যেয়ে লেখাপড়া করে অথবা নতুন কোথাও ঘুরতে যাওয় কিংবা গ্রাউন্ডে যেয়ে ফুটবল খেলা। আমি প্রতি সপ্তাহে আশেপাশে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিগুলোতে যেতাম আমার ফ্রেন্ডের সাথে ইংলিশ কর্নার গুলোতে। এটা অনেকটা ইংলিশ ক্লাব এর মত,

এখানে সবাই তাদের ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ এবং স্পিকিং টা প্র্যাকটিস করতে পারে একে অপরের সাথে  । এখানে খুব ভালো একটা সামাজিকতার আদান-প্রদান হয়। সফটওয়্যার ডিপার্টমেন্টের অন্যতম ক্লাস মনিটর হওয়ার সাপেক্ষে অন্য ইউনিভার্সিটি তে যেয়ে আমার ইউনিভার্সিটি কে রিপ্রেজেন্ট করতে আমার ভালোই লাগে।

শুভর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

‘চায়নাতে আসার আমার মূল উদ্দেশ্য হলো লেখাপড়া করে একটা বিজনেস ক্যারিয়ার সেট করা । চায়না বাণিজ্যের দিক থেকে সেরা এবং এরা  প্রযুক্তির দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে। এমনকি এরা কেউ কখনই পেমেন্ট করার জন্য ক্যাশ রাখে না তাদের  যা দেখে আমি প্রথমে অবাক হই ।সবই হয় মোবাইল এবং সফটওয়্যার এর মাধ্যমে মোবাইল ছাড়া এরা প্রায় কোন কাজই করেনা।  তাই আমার মতে, এ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ লেখাপড়া করে এবং এটা নিয়ে বিজনেস করতে হলে চায়না সবথেকে উত্তম জায়গা | এখানে আমি হাতে কলমে বিজনেস শেখার সুযোগ  পাচ্ছি এবং পাশাপাশি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ লেখাপড়া তেও এগিয়ে যাচ্ছি।