Your-paragraph-text-6

মহিষ কি কালো না ব্ল্যাক ডায়মন্ড!

মহিষ একটি অতি পরিচিত প্রাণী। সবাই কমবেশি তাকে চিনে, চেহারায় না চিনলেও কথায় কথায় সবাই মহিষের নাম বলে যেমন- কারও চেহারা কালো হলেই সবাি তাকে বলে তুই মহিষের মতো। যার ইংরেজি নাম- Bull বৈজ্ঞানিক নাম – Bos taurus এই প্রাণীটি পানিতে নামলে উঠতে চায় না, এবং আনন্দে মেতে ওঠে। দেখতে কালো হলেও আসলে এর গুন অনেক- 

১. মহিষের দুধ অনেক উপকারী, মহিষের দুধে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। যা হাড়ের 

    বিকাশের জন্য অধিক দরকারী এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝঁকি কমায়।

২. ক্যালসিয়াম হাড়ের বিল্ডিং ব্লক হিসাবে পরিচিত, নিয়মিত মাহিষের দুধ পান করলে এর থেকে 

    রেহাই পাওয়া যায়।

৩. মহিষের দুধে তামা, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস এবং জিঙ্কের মতো অন্যান্য খনিজ পদার্থও থাকে যা 

    হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে।

৪. মহিষের দুধে ঘুমকে প্ররোচিত করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই আপনি যদি রাতে ভালো ঘুম চান 

    এবং যাদের রাতে ঘুম আসে না, তার মহিষের দুধ খেলে এ অবস্থা থেকে রেহাই পাবেন।

৫. গরুর দুধের তুলনায় মহিষের দুধে প্রোটিন, চর্বি এবং ল্যাকটোজ বেশি থাকে। 

৬.  যাদের ওজন বেশি অর্থাৎ যাদের  স্থুলতা রয়েছে তাদের জন্য মহিষের দুধ খুবই উপকারী, কারন 

     এতে ফ্যাটির চেয়ে বেশি ক্যালোরি রয়েছে।

৭. মহিষের দুধে পাওয়া যায় মহামূল্যবান ভিটামিন-D যা সচরাচর খুব একট খাবারে পাওয়া 

    যায় না। সাধারণত সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন-D প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়। ভিটামিন-D হাড়, 

    নার্ভ, মাংসপেশিকে সচল রাখে।

মহিষের মাংসের উপকারিতা:

এটি লাল মাংস বা রেডমিট নামে পরিচিত।

১. গরুর মাংসের চেয়ে ১০% কোলেস্টোরলের পরিমান কম থাকে, তবে আমিষের পরিমান, 

   আয়রনের পরিমান, বি১২ বেশি থাকে, শিশুদের বৃদ্ধিতে এবং মানসিক বিকাশে সাহায্য করে।

২. ৭০% কোলেস্টরল কম, চর্বি কম, এলার্জি থাকে না, আয়রন বেশি থাকে যা মানুষের দেহে রক্ত 

    তৈরি ও রক্ত স্বল্পতা দূর করে, লো-প্রেসার দূর করে।

৩. এতে আয়রনের পরিমান বেশি থাকায় এটি গর্ভবতি মায়েদের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে।

৪. মহিষের মাংস হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, কারণ এতে চর্বির পরিমান মাত্র ২ শতাংশ।

৫. যারা বাতব্যাথার ভয়ে গুরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন, তারা নির্ভয়ে এটি খেতে পারেন।

জাতিসংঘের খাদ্য  ও কৃষি সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিভাগসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, গুণগত মানের দিক থেকে গরুর মাংসের চেয়ে মহিষের মাংস অত্যন্ত স্ব্যাস্থ্য সম্মত।

পবিত্র কুরআনের সূরা ইয়াসিন আয়াত ৭২ ও ৭৩ নং আয়াতে, আল্লাহতাআলা বলেছেন, আমি চতুষ্পদী কতকগুলো প্রাণীকে মানুষের বশীভূত করে দিয়েছি, সেগুলো তারা বাহন এবং কতক তারা ভক্ষণ করে, মহিষ চতুষ্পদী প্রাণী, এটি দ্বারা আমরা গাড়িটানি এবং এর মাংস ও দুধ ভক্ষণ করি, এটি আমাদের জন্য পরিপূর্ণ হালাল একটি প্রাণী- সূরা আল নাহল।

যারা দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা থেকে মাংস বাদ দিয়ে দিয়েছেন তারা নির্দ্বিধায় মহিষের মাংস যোগ করতে পারেন। 

আসলে প্রাণী জগতের প্রাণীদের মধ্যে মহিষ একটি  ব্ল্যাক ডায়মন্ড। 

লেখা: মিস নিলুফা ইয়াসমিন

সিনিয়র প্রভাষক, জীববিজ্ঞান

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, ঢাকা

Comments are closed.