চাকরিদাতা, সফল উদ্যোক্তা পেশা পরামর্শকদের কথায় ইদানীং বারবার ঘুরেফিরে আসে ‘কমিউনিকেশন স্কিল’ বা ‘যোগাযোগ–দক্ষতা’র কথা। যে পেশাই আমরা বেছে নেন না কেন, এ বিষয়ে দক্ষ আমাদের হতেই হবে। তাই এ জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো আমাদের ছাত্রজীবন। কিভাবে আমরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও দক্ষ হয়ে উঠতে পারি, সে ধারাবাহিক কিছু কথা।

বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখুনঃ- কেউ ভালো লেখেন, কেউ ভালো বলেন, কেউ ভালো শ্রোতা, কেউবা দারুণভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে জানেন (প্রেজেন্টেশন দেন)। যোগাযোগ–দক্ষতা বিকাশের জন্য সব রকমের যোগাযোগেই নিজেকে সাবলীল ও দক্ষ করে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলা ও ইংরেজিতে সাবলীলভাবে বলা ও লেখা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি কোনো কিছু বুঝে পড়া এবং মন দিয়ে শোনাও খুব জরুরি। আপনি যা বলছেন, তা আরেকজন বুঝতে পারছে কি না, কিংবা আপনি অন্যের কথা বুঝতে পারছেন কি না—দুটিই যোগাযোগ–দক্ষতার ওপর নির্ভর করে।

অনেক পড়তে হবেঃ- আমরা খুব সরলভাবে বলে পারি, যাঁরা অনেক পড়েন, তাঁরা অনেক বিষয় সম্পর্কে খোঁজ রাখেন। কাগুজে বই-সাময়িকী-সংবাদপত্র হোক, কিংবা ইন্টারনেটে ই-পত্রিকা, ই-সাময়িকী বা পেশা- বিজ্ঞান – ব্যবসাবিষয়ক কোনো পোর্টালই হোক না কেন, নিয়মিত চোখ রাখলে সাম্প্রতিক সব বিষয় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। “যোগাযোগ–দক্ষতা বিকাশের জন্য যখনই কোনো লেখা পড়ছেন, মাথায় ‘ফাইভ ডব্লিউ-এইচ’ নামের সূত্রটি গেঁথে নিতে হবে। ফাইভ ডব্লিউ-এইচ হলো হু, হোয়াট, হোয়্যার, হোয়েন, হোয়াই ও হাউ”। লেখাটি লেখক কেন লিখেছেন, কার জন্য লিখেছেন, কোন পরিপ্রেক্ষিতে লিখেছেন, কী কী বিষয় তুলে ধরা হয়েছে, কোন কোন বিষয় যুক্ত করা যেতে পারে, আপনি লিখলে কীভাবে লিখতেন—এসব মাথায় দ্রুত এঁকে ফেলতে হবে। যত বেশি পড়বেন, যত জানবেন, কথা বলার সময় আপনি তত আত্মবিশ্বাস পাবেন। জানার ঘাটতি থাকলে বুঝিয়ে বলা ও শুনে বোঝা—দুটি কাজই কঠিন হয়ে যায়।

অনুসরণ করতে হবেঃ যোগাযোগ–দক্ষতা বিকাশের জন্য বক্তৃতা (পাবলিক স্পিকিং) বা নিজের ভাবনা উপস্থাপন করার (প্রেজেন্টেশন) কৌশল জানতে হবে। আপনি নিজেকে দক্ষ করে তুলতে চাইলে যেকোনো বিখ্যাত ব্যক্তির কৌশলগুলো সহজে অনুসরণ করতে পারেন। ইউটিউবে পৃথিবীখ্যাত ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন স্পিকারের বক্তব্য দেওয়ার কৌশল নিয়ে অনেক ভিডিও দেখতে পাবেন। এ ছাড়া পড়তে পারেন ক্রিস অ্যান্ডারসনের লেখা টেড টক: দ্য অফিশিয়াল টেড গাইড টু পাবলিক স্পিকিং। এছাড়াও আমাদের দেশে এখন অনেক প্রতিষ্ঠান এবিষয়ে বিভিন্ন ধরনের কোর্স চালু করেছে। তাই চাইলে সেখানে আপনি আপনার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কোর্স গুলো করতে পারেন। তবে অবশ্যই কোর্স করার পূর্বে কোর্স প্রদান কারী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভালোকরে খোঁজ নিবেন। এটি বাংলা প্রবাদ প্রচলিত আছে, “চকচক করলেই সোনা হয় না”

লেখা: মহিউদ্দিন সুমন

প্রভাষক, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, ঢাকা



 

মহিষ একটি অতি পরিচিত প্রাণী। সবাই কমবেশি তাকে চিনে, চেহারায় না চিনলেও কথায় কথায় সবাই মহিষের নাম বলে যেমন- কারও চেহারা কালো হলেই সবাি তাকে বলে তুই মহিষের মতো। যার ইংরেজি নাম- Bull বৈজ্ঞানিক নাম - Bos taurus এই প্রাণীটি পানিতে নামলে উঠতে চায় না, এবং আনন্দে মেতে ওঠে। দেখতে কালো হলেও আসলে এর গুন অনেক-   


১. মহিষের দুধ অনেক উপকারী, মহিষের দুধে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। যা হাড়ের   

    বিকাশের জন্য অধিক দরকারী এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝঁকি কমায়।  

২. ক্যালসিয়াম হাড়ের বিল্ডিং ব্লক হিসাবে পরিচিত, নিয়মিত মাহিষের দুধ পান করলে এর থেকে   

    রেহাই পাওয়া যায়।  

৩. মহিষের দুধে তামা, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস এবং জিঙ্কের মতো অন্যান্য খনিজ পদার্থও থাকে যা   

    হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে।  

৪. মহিষের দুধে ঘুমকে প্ররোচিত করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই আপনি যদি রাতে ভালো ঘুম চান   

    এবং যাদের রাতে ঘুম আসে না, তার মহিষের দুধ খেলে এ অবস্থা থেকে রেহাই পাবেন।  

৫. গরুর দুধের তুলনায় মহিষের দুধে প্রোটিন, চর্বি এবং ল্যাকটোজ বেশি থাকে।   

৬.  যাদের ওজন বেশি অর্থাৎ যাদের  স্থুলতা রয়েছে তাদের জন্য মহিষের দুধ খুবই উপকারী, কারন   

     এতে ফ্যাটির চেয়ে বেশি ক্যালোরি রয়েছে।  

৭. মহিষের দুধে পাওয়া যায় মহামূল্যবান ভিটামিন-D যা সচরাচর খুব একট খাবারে পাওয়া   

    যায় না। সাধারণত সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন-D প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়। ভিটামিন-D হাড়,   

    নার্ভ, মাংসপেশিকে সচল রাখে।  


মহিষের মাংসের উপকারিতা:  

এটি লাল মাংস বা রেডমিট নামে পরিচিত।  

১. গরুর মাংসের চেয়ে ১০% কোলেস্টোরলের পরিমান কম থাকে, তবে আমিষের পরিমান,   

   আয়রনের পরিমান, বি১২ বেশি থাকে, শিশুদের বৃদ্ধিতে এবং মানসিক বিকাশে সাহায্য করে।  

২. ৭০% কোলেস্টরল কম, চর্বি কম, এলার্জি থাকে না, আয়রন বেশি থাকে যা মানুষের দেহে রক্ত   

    তৈরি ও রক্ত স্বল্পতা দূর করে, লো-প্রেসার দূর করে।  

৩. এতে আয়রনের পরিমান বেশি থাকায় এটি গর্ভবতি মায়েদের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে।  

৪. মহিষের মাংস হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, কারণ এতে চর্বির পরিমান মাত্র ২ শতাংশ।  

৫. যারা বাতব্যাথার ভয়ে গুরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন, তারা নির্ভয়ে এটি খেতে পারেন।  


জাতিসংঘের খাদ্য  ও কৃষি সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিভাগসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, গুণগত মানের দিক থেকে গরুর মাংসের চেয়ে মহিষের মাংস অত্যন্ত স্ব্যাস্থ্য সম্মত।  

পবিত্র কুরআনের সূরা ইয়াসিন আয়াত ৭২ ও ৭৩ নং আয়াতে, আল্লাহতাআলা বলেছেন, আমি চতুষপদী কতকগুলো প্রাণীকে মানুষের বশীভূত করে দিয়েছি, সেগুলো তারা বাহন এবং কতক তারা ভক্ষণ করে, মহিষ চতুষপদী প্রাণী, এটি দ্বারা আমরা গাড়িটানি এবং এর মাংস ও দুধ ভক্ষণ করি, এটি আমাদের জন্য পরিপূর্ণ হালাল একটি প্রাণী- সূরা আল নাহল।  


যারা দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা থেকে মাংস বাদ দিয়ে দিয়েছেন তারা নির্দ্বিধায় মহিষের মাংস যোগ করতে পারেন।   

আসলে প্রাণী জগতের প্রাণীদের মধ্যে মহিষ একটি  ব্ল্যাক ডায়মন্ড।   

লিখেছেনঃ মিস নিলুফা ইয়াসমিন,  সিনিয়র প্রভাষক, জীববিজ্ঞান