Blog (2)

Visiting Military Museum: An Outstanding Study Tour with DIC students

Visiting Military Museum: An Outstanding Study Tour with DIC students

Study tour, a break from routine classroom settings, injects enthusiasm and excitement
into the learning process. In fact, study tours can inspire students, reignite their passion for their
field of study, and motivate them to explore further. In order to fulfil this purpose, Daffodil
International College arranged a study tour at Bangabandhu Military Museum for its students’
holistic development.
On 27 May 2023, the students of class XI (session: 2022-23) along with their teachers
started for Bangabandhu Military Museum at 9.30 am. The museum is located at Bijoy Sarani,
Dhaka. It has a collection of Bangladesh’s military history, heritage, success stories and various
weapons and ammunition.
As the destination is not very far from college campus, we have decided to go on foot.
While crossing Manik Mia Avenue, the juvenile students had some snaps in front of the
Parliamentary Building. They were, really, excited and thrilled while marching towards the
destination. We reached the museum at 10.30 am and found that some of my fellow students had
already arrived at their most cherished destination.
After finishing the counting of the students, they entered the museum in a queue
maintaining discipline and rules of the institution. While exploring the museum, they observed
our heritage, success stories of our ancestors, wide implementation of Augmented Reality,
Interactive Displays, Virtual Reality, Holograms etc.

The museum is divided into six sections, including the Bangladesh History Gallery on the
ground floor, Bangladesh Army Gallery on the 2nd floor, Bangladesh Air Force gallery on the
3rd floor, UN Peacekeeping Gallery on the 4th floor, and Bangladesh Navy Gallery at the
basement.

There is also a separate museum named “Toshakhana Jadughor” within the museum
complex, where gifts and awards received by the country’s important personnel have been
showcased. A grand sculpture of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman has been placed in the
middle of the “Toshakhana Jadughor”.

Our students got amazed looking at the awesome architectural design and infrastructure
inside the museum. The study tour came to an end almost at 1.00 pm. At the end of the tour, they
experienced a heavy rainfall poured down the city which made the day more memorable for
them. Due to excessive rainfall, we had to wait some more time at the museum. This study tour
and the rainfall made the students refreshed by removing the monotony of academics.
Overall, it was an unforgettable outing of the teachers and the students which will remain
forever in the memory and keep us invigorated again and again.
Finally, I would like to say that this kind of study tour offers unique opportunities for
students to learn, grow, and develop both academically and personally. Moreover, it provides
practical experiences through gaining knowledge and foster various skills that are essential to
achieve success in the academic and professional spheres.

19years

সাফল্য ও অর্জনের ১৯ বছরে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ

বিশ্বায়নের এ যুগে জানা ও এগিয়ে যাওয়ার শর্তে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি সমৃদ্ধ গুণগত মানসম্মত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। দেশে ও বিদেশে মানসম্মত এবং মানব সম্পদ সৃষ্টিশীল শিক্ষার রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। তাছাড়া আগামীর সভ্যতায় আমরা সম্মানের সাথে বাঁচতে চাই। আমাদের বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে সর্বাধুনিক তথ্য-প্রযুক্তিসমৃদ্ধ দায়িত্বশীল ও সচেতন দেশপ্রেমিক সুনাগরিক এবং এক একজন আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখে গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদ সৃষ্টি ও দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান শিক্ষা উদ্যোক্তা জনাব ড. মো: সবুর খান রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র লালমাটিয়ায় ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ।

কলেজের ভিশন শিক্ষার গুণগত ও সংখ্যাগত মানোন্নয়ন এবং আলোকিত মানুষ বিনির্মাণ। মানসম্পন্ন শিক্ষার মাধ্যমে এসডিজি অর্জন ও ২০৪১ সালের মধ্যে প্রিয় বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। এ এক অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি দেশ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ সত্যিকার অর্থে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সুযোগ্য পরিচালনা পর্ষদের দিক নির্দেশনায় এবং অধ্যক্ষের নেতৃত্বে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন কলেজের সুশিক্ষিত, দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দ।

কলেজের রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল নিজস্ব ভবন ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুপরিসর শ্রেণিকক্ষসমূহ, সমৃদ্ধ বিজ্ঞানাগার, লাইব্রেরি এবং আইসিটি ল্যাব যা সার্বক্ষনিক সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণের আওতাভূক্ত। এখানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় বাংলা মাধ্যম ও ইংলিশ ভার্সনে অধ্যয়নের সুযোগ রয়েছে। নিয়মিত সাপ্তাহিক পরীক্ষা, মাসিক পরীক্ষা এবং অন্যান্য মূল্যায়ন পরীক্ষার ব্যবস্থা। দুর্বল ও অমনোযোগী শিক্ষার্থীদের অগ্রহী ও চৌকষ হিসেবে গড়ে জন্য তোলার রয়েছে আপ্রাণ প্রচেষ্টা। সপ্তাহের শেষ দিনে রয়েছে সপ্তাহব্যাপী পাঠদান কার্যক্রমের মূল্যায়ন। নিয়মিত গাইড শিক্ষকের তত্ত্বাবধান। আইসিটি বিষয়ে রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব এবং আবশ্যিকভাবে কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য রয়েছে পৃথক পৃথক শাখার ব্যবস্থা। এ+ প্রাপ্ত, অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে নানারকম বৃত্তির ব্যবস্থা। রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত পরিবেশ। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক বিভাগ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইংরেজি, বিবিএ, সিএসই, ফিন্যান্স ও মার্কেটিং বিষয়সমূহে অনার্স কোর্স চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

বোর্ড পরীক্ষায় কলেজের পাসের হার জিপিএ-৫সহ শতভাগ। কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা দেশের স্বনামধন্য সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। অনেক শিক্ষার্থী বিদেশেও উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছে। অনেকেই শিক্ষাগ্রহণ শেষে দেশ-বিদেশে দারণভাবে প্রতিষ্ঠিত। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দ ও গৌরবের বিষয়। কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি সংগঠন (এলামনাই এসোসিযেশন) রয়েছে।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক এই ত্রিমাত্রিক প্রয়াসের সমন্বয়ে করোনা অতিমারির শুরু থেকেই শ্রেণি কার্যক্রমসহ প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে ড্যাফোডিল গ্রুপের নিজস্ব প্লাটফর্ম Smart Edu (EMS, elearning, Smart Board, Event, Dashboard) এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজগুলোর প্রতি প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দিয়ে তাদেরকে যথাযথ অনুশীলনের আওতায় আনা হয় এবং কুইজ, হ্যান্ডনোট, অ্যাসাইনমেন্ট ইত্যাদি আদান-প্রদান করা হয়।

শিক্ষার্থীদের উৎসাহ এবং শিক্ষকবৃন্দের আন্তরিকতায় প্রতিটি ক্লাস হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। জাতীয় দিবসসমূহ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয় নিয়মিত। অনুষ্ঠিত হয় নানা প্রকার সরাসরি ও  অনলাইনভিত্তিক সৃজনশীল প্রতিযোগিতা।

শিক্ষাকে পূর্ণাঙ্গ ও কার্যকর করা লক্ষ্যে কলেজে বিভিন্ন ধরণের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি যেমন: বাংলা ও ইংরেজি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, কুইজ আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, চিত্রাংকণ প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান মেলা, বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, কুইজ প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইত্যাদি আয়োজন করা হয় নিয়মিত। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করার লক্ষ্যে জাতীয় দিবসগুলোতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যেখানে শিক্ষার্থীরা স্বত:স্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবার, প্রতিষ্ঠান, দেশ ও জাতির প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হওয়ার সুযোগ পায়। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দেশে ও বিদেশে উচ্চ শিক্ষার উপযোগী করে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ ৩/৩ ব্লক-এ, লালমাটিয়া, ঢাকা-১২০৭ ফোন: ৪৮১১৩৭৯৩, ০১৭১৩৪৯৩২২৭, ০১৭১৩৪৯৩২৪০ ওয়েব : www.dic.edu.bd  ই-মেইল : info@dic.edu.bd

Daffodil International College Teachers Blog by Nasreen Sultana (NS)

নিরাপদ খাদ্য ও সাম্প্রতিক সময়

নিরাপদ খাদ্য ও সাম্প্রতিক সময়

ঈশ্বর গুপ্তের বাণী- ‘ ভাত মাছ খেয়ে বাঁচে বাঙালি সকল।’ কিন্ত ভাত মাছ খেয়ে বেঁচে থাকার প্রয়াস বর্তমানে কঠিন হয়ে পড়েছে। কেননা আজকাল অসাধু ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ফায়দা লুটতে ইউরিয়া, ফরমালিন, কার্বাইড সহ বিভিন্ন কেমিক্যাল পদার্থ খাদ্যদ্রব্যে মিশিয়ে তা বিষে পরিণত করে ফেলছে।

হাট বাজার ঘুরেও কেমিক্যাল মুক্ত মাছ পাওয়া যায় না কোথাও। আগে পাইকারি আড়ৎ গুলিতে প্রকাশ্যে মাছের স্তুপে ফরমালিন বা কেমিক্যাল যুক্ত পানি স্প্রে করা হতো কিন্তু প্রশাসনের নজরদারিতে তা এখন কমে গেলেও অভিনব উপায়ে মাছে ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। যেমন- বড় মাছ তাজা অবস্থায় ফরমালিন ইনজেকশনের মাধ্যমে পুশ করা, ছোট মাছ ফরমালিন মিশ্রিত পানির ড্রামে চুবিয়ে তুলে ফেলা, ফরমালিন মিশ্রিত বরফ যা দেখতে হালকা বাদামি রঙের তা দিয়ে মাছকে চাপা দিয়ে রাখা ইত্যাদি।

বেকারীর কারখানায় খাবার সতেজ ও আকর্ষণীয় করার জন্য অতিরিক্ত পরিমাণ অ্যাডেটিভ পদার্থ, টেক্সটাইল রং সহ বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারে খাবার বিষাক্ত হয়ে পড়ে।

বাজারে এখন বিভিন্ন ফলের সমাহার যেমন:আম,জাম,কলা, পেঁপে পেয়ারা থেকে শুরু করে আপেল আঙ্গুর নাশপাতিসহ দেশী ও বিদেশী সব ফলই চোখে পড়ে। কিন্তু এই সব ফলই বিষে ভরা। অতিরিক্ত মুনাফা লাভের জন্য ফল গাছে অপরিপক্ক থাকা অবস্থায় ইথিলিন ও ইথরিল হরমোন অতিমাত্রায় স্প্রে করা হয় এবং ক্যালসিয়াম কার্বাইড ফল পাকাতে ব্যবহার করা হয়। যারকারণে ফলগুলো রীতিমত  বিষে পরিণত হয়।তবে কেমিক্যাল ব্যবহার করে পাকানো ফলের সব অংশে সমান রং হবে এবং ফলের ভিতরের চামড়ার অংশে একটু তিতা হবে। এছাড়া ফলের এক অংশে টক অন্য অংশে মিষ্টি লাগবে।

আজকাল মুড়িতেও ইউরিয়া,হাইড্রোজ ব্যবহার করে লম্বা, সাদা ও আকর্ষণীয় করা হচ্ছে।এসব মুড়ির গায়ে অসংখ্য ছিদ্র থাকে, দেখতে খুব সাদা কিন্তু স্বাদ পানসে হয়ে যায়।

এসব ভেজাল- বিষাক্ত  খাদ্য  খেয়ে ক্যান্সার, কিডনি – লিভার বিকল হয়ে যাওয়া  সহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের ‘বিষাক্ত খাদ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি’ শীর্ষক সেমিনারে বলা হয়, শুধু ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩ লাখ লোক ক্যান্সারে, ডায়াবেটিস রোগে ১ লাখ ৫০হাজার, কিডনি রোগে ২ লাখ লোক আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া গর্ভবতী মায়ের শারীরিক জটিলতা সহ গর্ভজাত বিকলাঙ্গ শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। সুতরাং এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি গণ সচেতনতা ও দরকার।

Formalin in Food
Formalin in Food

আমরা  কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করলে খাদ্যদ্রব্যকে কেমিক্যাল মুক্ত করতে পারি।যেমন – মাছ ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে সহজেই ফরমালিন মুক্ত করা যায়।মাছ কিনে এনে খুব ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে এর পর প্রায় এক ঘণ্টা তাকে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ঠাণ্ডা পানির প্রভাবে মাছের শরীরের ফরমালিন কিছুটা বেরিয়ে যায়।এর পর লবণ পানি তৈরি করে তাতে কিছুক্ষণের জন্য ভিজিয়ে রাখুন মাছ। লবণ মাছের শরীরের ক্ষতিকর রাসায়নিককে সহজেই বের করে আনে।

এছাড়া প্রথমেই চাল ধোয়া পানি দিয়ে ধুয়ে নিন মাছ। তার পর সাধারণ পানি দিয়ে ডুবিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। এতে সহজেই ফরমালিন সরে যাবে। 

ফল ও সবজিকে ফরমালিনমুক্ত করার সব চাইতে ভালো পদ্ধতি হলো- ভিনেগার ও পানির মিশ্রণে (পানিতে ১০% আয়তন অনুযায়ী) ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখা। এতে প্রায় ১০০ ভাগ ফরমালিন দূর হয়।

এছাড়া ফলমূল খাবার আগে সেটি হালকা গরম এবং লবণ মিশ্রিত পানিতে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে করে ফরমালিনের পরিমাণ প্রায় ৯৮ শতাংশ দূর হবে।

আশা করি এসব ঘরোয়া টিপস অনুসরণ করলে আমাদের কিছুটা উপকার হবে। পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করণে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষের নজরদারি আরও কঠোর ও বিস্তৃত করতে হবে।

তথ্য সূত্র: বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন ও দৈনিক যুগান্তর

নাসরীন সুলতানা

প্রভাষক (রসায়ন বিভাগ)

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ

Daffodil International College Teachers Blog by rakib Mojumder (MH) Sir

আদর্শ শিক্ষক- আলোর পথের দিশারী

আদর্শ শিক্ষক- আলোর পথের দিশারী

একজন আদর্শ শিক্ষক সঠিক পথের দিশারী, পথ পরিদর্শক এবং আলোর পথের পথ প্রদর্শক। তাঁর দূরদর্শীতা, আকর্ষণীয় সুন্দর ব্যক্তিত্ব, সহনশীলতা, সহমর্মিতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, মূল্যবোধ, চৌকষ ও কৌশলী ভূমিকা শিক্ষার্থীর শিখন প্রক্রিয়ায়, জ্ঞান অন্বেষণে, মেধার বিকাশ ও উন্নয়নে, চরিত্র গঠনে এক যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে থাকে।

একজন নীতিবান ও বিবেকবান আদর্শ শিক্ষকের ছোঁয়ায় যেমনটি শিক্ষার্থীর মানসম্মত সুশিক্ষা সুনিশ্চিত হয় তেমনি শিক্ষার্থীদের মানবিক গুণাবলী, মানসিক উৎকর্ষ সাধন এবং মননের সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

আদর্শ শিক্ষকের কথা ও কাজের মধ্যে থাকে এক অপূর্ব মেলবন্ধন সমীকরণ। তাঁর আচার-ব্যবহার শিক্ষার্থীদের আদর্শবোধে উজ্জীবিত ও উদ্বুদ্ধ করে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে সাহস সঞ্চার হয় এবং শিক্ষার্থীরা চরম ও পরমভাবে অনুপ্রাণিত হয়। সর্বোপরি, আদর্শ শিক্ষকের সীমাহীন উৎসাহ পেয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের সব ভয়কে জয় করে সাফল্যের চূড়ায় উঠতে পারে এবং নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

আদর্শ শিক্ষকের মৌলিক মানবীয় গুণাবলী, অনুপম চারিত্রিক মাধুর্য, বুদ্ধিদীপ্ত উচ্চ নৈতিকতাসম্পন্ন জ্ঞান, সহযোগিতার মনোভাব, কর্তব্যনিষ্ঠা ও চিত্তাকর্ষক ব্যক্তিত্ব শিক্ষার্থীর মনে দাগ কাটে। যার ফলে শিক্ষার্থীর সাথে শিক্ষকের আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়। ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যকার এই সম্পর্ক এক অনাবিল, আদর্শিক ও যুগপৎ সম্পর্ক।

যেখানে মৌলিক কোন চাওয়া-পাওয়ার বিষয় সংযুক্ত থাকেনা, থাকে পরস্পরের প্রতি এক অকৃত্রিম ভালোবাসা ও অবিরাম শুভকামনা।

পরিশেষে, সকল আদর্শ শিক্ষকমন্ডলীর প্রতি রইল সশ্রদ্ধ সালাম, বিনম্র শ্রদ্ধা ও নিরন্তর ভালোবাসা।

ধন্যবাদান্তে
রাকিব মজুমদার
সিনিয়র প্রভাষক,
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, ঢাকা।

Daffodil International College Sanchita Nargees Blog

Importance of Co-curricular Activities to build up Self-confidence.

Importance of Co-curricular Activities to build up Self-confidence:

“These activities are the ones,

                                          That build values in life,

                                          These are the ones,

                                          Can’t be taught in class,

                                         Can only be an experienced.

                                         Participating in these activities,

                                         You develop feelings for fellow beings,

                                         And install confidence in life.

                                         These activities make you smart and wise.

                                         Help you to strengthen your base fiber life,

                                         Open your arms, come one and all,

                                          Participate in college social life.”

In the 21st century, the world is changing fast. That is why, the conventional education curriculum which was developed in the early 20th century, has to pave the way to a new kind of education and learning which is related to our day to day living and plays a vital role to build up career and personality. Co-curricular activities are different from academic activities. It is true that much of our intellectual development happens, to a great extent, in the classroom but it is not enough to survive in life.  Students can participate in co-curricular activities besides their academic activities. These activities give unique experience of life, these activities make one smart and wise. These activities encourage to expose hidden talents. It helps to the students to become aware of time management and more responsible. It helps the learners to be confident, problem solving and reasoning. When these activities blended with academics, it will help the students learn  effectively. It will also give them an opportunity of thinking unusually and getting the innovative ideas and above all to be self-dependent.

There are many co-curricular activities like- debate, recitation, singing songs, dancing, public speaking, extempore speech, library work, social service etc. These are the activities through which a learner can strengthen the classroom learning as well as other activities both inside and outside the classroom.

The students who engage themselves in these co-curricular activities, can achieve better results in their academic ground. Their academic performance develop day by day as they learn how to balance their co-curricular activities with their academic pursuits. Moreover, they better understand how to manage their time effectively and also increase their interest in the classroom. So, it is essential to understand the importance of co-curricular activities in improving academic performance. In other words, co-curricular activities enable a learner to digest his academic studies and make him/her to be confident in every sphere of practical life. In this competitive era, co-curricular activities also play a vital role to build up a better career for the learners. Because it broadens new horizons for them. It makes the students feel happier, stronger, confident and more likely to lead a healthy and active life style.

Now we are passing a very critical situation. In a normal situation, Pre Covid-19, all extracurricular activities for the students took place in academic environment. Though it is not possible in this current pandemic situation, students can involve themselves virtually in many  co-curricular activities. And it helps them to be fit mentally removing their mental stress. In this connection, Virtual club activities can be implemented during the pandemic. Through Google meet or Zoom, students can participate in interactive session where they can share their experience and receive suggestion from the experts. Now at this moment, they can more involve in many indoor activities like crafts, creative writings, gardening, graphic designs etc.

By the above discussion, we can say that the students engaging through co-curricular activities can learn essential values about different religions, events, cultures of national and international importance as well as discipline. They also learn to understand different values, social ethics, motivational skills, capability of  accepting  challenges, self-dependent, self-contentment etc. In order to make the new generation all-rounder and self-reliant, co-curricular activities should be integrated in educational sector compulsorily.

-Sanchita Nargees

Sr. Lecturer

Daffodil International College

Daffodil International College Blog(Zarka Sultana)_DIC

BOOK REVIEW: “RICH DAD POOR DAD”

BOOK REVIEW: “RICH DAD POOR DAD”

কয়েকদিন ধরে একটি বই পড়ে শেষ করলাম। বইটি হলো”রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড “লিখেছেন রবার্ট টি কিয়োসাকি। এই কোভিড-১৯ এর সময়ে বইটির অনেক মূল্যবান বিষয় আছে যা সবার জানা দরকার। বইটিতে যা আলোচনা করা হয়েছে তা সাধারণত আমরা স্কুল কলেজে শিখি না। অথচ একজন মানুষ আমি বলবো সফল হবার উচ্চাকাঙখা আছে তার এই বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন।

Rich Dad Poor Dad
Rich Dad Poor Dad

বইটিতে অর্থ নিয়ে ২টি দৃষ্টিভঙ্গি আছে। ১টি “অর্থের প্রতি ভালোবাসাই সমস্ত নষ্টের মূল❞। অন্যটি
❝অর্থ যথেষ্ট না থাকাই সমস্ত অনিষ্টের কারণ❞।

লেখক এই ২টি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিস্তর চিন্তাভাবনা করতে লাগলেন এবং এক পর্যায়ে মুল্যবান অন্তর্দৃষ্টি লাভ করলেন।

তিনি বুঝলেন ❝আমার এইটা করার সামর্থ নেই❞। এই কথাটি ব্রেইন কে না দিয়ে ❝আমার কী ভাবে এটা করার সামর্থ তৈরি হবে❞ ব্রেইনকে সেই বিষয়ে চিন্তা করতে বাধ্য করাতে হবে। লেখক দেখিছেন- ❝আমার করার সামর্থ নেই❞ এই কথাগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বলতে থাকলে তোমার ব্রেইন বা মগজ কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
আর যদি নিজেকে বলো -❝আমার কী ভাবে এটা করার সামর্থ হবে❞, তখন তোমার মগজকে কাজের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হবে।

এটা বিশ্বাস করতে হবে, অভ্যাসবশত ❝আমার করার ক্ষমতা নেই❞ বলা একটা মানসিক আলস্যের লক্ষণ।
সঠিক শারীরিক ব্যায়াম স্বাস্থের উন্নতির সুযোগ দেয়। আলসেমি স্বাস্থ্য ও ধন-সম্পত্তি দুটিই ক্ষতি করে।

এই বইটিতে আরো আলোচিত হয়েছে যে,
❝অর্থ একধরনের ক্ষমতা❞। কিন্তু আরো ক্ষমতাশালী হচ্ছে, ❝আর্থিক বিষয়ে শিক্ষা❞। অর্থাৎ, অর্থ অর্জন করলেই হবে না, অর্থের উপরে কর্তৃত্ত্ব করতে শিখতে হবে।

-জীবন তোমাকে নিরন্তন ধাক্কা দিয়ে যাবে। কেউ জীবনের এই ধাক্কাগুলো সহ্য করে যায়, কেউ রেগে গিয়ে পাল্টা ধাক্কা মারে। আসলে জীবন আমাদের সবাইকে চারদিক থেকে ধাক্কা মারে। এক্ষেত্রে কেউ হাল ছেড়ে দেয়, অন্যেরা লড়াই করে।

আমাদের জীবনের এই ধাক্কাকে স্বাগত জানাতে হবে, লড়াই করতে হবে। মনে রাখতে হবে-
তুমি ভীষণভাবে জিততে চেয়েছো।। মনের গভীরে জেতার উত্তেজনা থাকলে তুমি জিতবে।
অবশ্যই জিতবে।।

জারকা সুলতানা

ভাইস প্রিন্সিপাল

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ

Daffodil College Alumni student Shuaib Hassan success story (DIC)

ঢাবি এবং জাবি দুটোতেই চান্স পাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা সুয়াইব হাসানের

আমি সুয়াইব হাসান। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। আমার জন্ম নরসিংদীতে। সেখানেই বেড়ে উঠা। শিক্ষক পরিবারের সন্তান হওয়ায় শৈশব থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ এবং পারিবারিক পৃষ্ঠপোষকতা দুটোই ছিলো। জেএসসিতে দুর্দান্ত রেজাল্টের পর পরিবারের প্রত্যাশার পারদও চূড়ায় উঠে। তবে প্রত্যেকটি মানুষের জীবনেই কিছু ঘটনা থাকে যা তাকে বাস্তবতার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়, অনেক কিছু উপল‌দ্ধি করতে শেখায়। আমার জীবনে এইরকমই একটা ঘটনা হলো এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল। জেএসসিতে ট্যালেন্টপুল এ বৃত্তি পাওয়া আমি SSC তে এ গ্রেড নিয়ে পাশ করলাম। পরিবার, শুভাকাঙ্ক্ষী সবাইকে তো হতাশ করলামই আর নিজেকেও ফেললাম বাস্তবতার চরম পরীক্ষায়। পড়াশোনার এই বেহাল দশা দেখে আমার পরিবার আমাকে ঢাকায় ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিলো। বড় ভাই ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ছাত্র হওয়ার সুবাদে ভর্তি হলাম ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজে। 

শুরু হল যান্ত্রিকতার এই শহুরে জীবন। ঢাকার আবহাওয়া, মিরপুর রোডের জ্যাম আর পদার্থ -রসায়নের জটিলতায় প্রথম কয়েকটা মাস কিছুটা স্ট্রাগল করতে হল। তবে সব কিছুর সাথে আস্তে আস্তে মানিয়ে নিতে শুরু করলাম। কলেজ বিল্ডিং, মিরপুর রোড, নিউ মার্কেট সব কিছু আপন হতে শুরু করলো। সেইসাথে কলেজে জুটে গেলো বেশ ভালো কয়েকজন বন্ধু। টিচারদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় গণিত-পদার্থের জট আস্তে আস্তে খুলতে লাগলো। তবে আজ কলেজ জীবনের দিকে তাকালে যেই জিনিসটা সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে সেইটা হল “পত্রিকা পড়া।” তখন দেশে রাজনৈতিক পালাবদলের সময়। কলেজে ঢোকার সাথে সাথেই পত্রিকা পড়তে শুরু করতাম। প্রথম পেইজ থেকে শুরু করে সম্পাদকীয়, কলাম, খেলাধুলা, আন্তর্জাতিক সবকিছু। এমনকি টিফিন টাইমেও ডুবে থাকতাম পত্রিকায় (এই পত্রিকা পড়ার অভ্যাস টা এডমিশন টেস্টে দারুণ কাজে দিয়েছিলো)। মাঝে মাঝে ক্লাস ফাঁকি দিয়েও পত্রিকা পড়তাম। একদিন তো রসায়নের ম্যাম দেখে বলেই বসলেন “তুমি কি পত্রিকা পড়তে কলেজে আসো? “🤣🤣।

যাইহোক প্রথম বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা দিলাম। বিজ্ঞান বিভাগে কলেজে ২য় স্থান অধিকার করলাম। ততদিনে এই শহুরে জীবনের সাথে অনেকটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি। কিন্তু সামনে চলে এলো এক জটিল সমস্যা। একান্তই পারিবারিক হওয়ার সেটা বিস্তারিত আর না বলি। কিন্তু সেই সময় কলজে অথরিটি যদি পাশে না দাড়াতো তাহলে আমার শিক্ষাজীবনে ব্যাঘাত ঘটার সমূহ সম্ভাবনা ছিলো। পারিবারিক সংকট পাশ কাটিয়ে আবার পড়াশোনার দিকে মনোযোগ দিলাম। কিন্তু জৈব রসায়ন আর ইন্টিগ্রেশন এর চাপে পড়াশোনাও অনেক কঠিন মনে হতে লাগলো। কলেজ থেকে কোচিং এর ব্যাবস্থা করা হলো। স্যার – ম্যামরা তদের সর্বোচ্চ টুকু দিয়ে চেষ্টা করলেন। আমিও আমার সাধ্যমত চেষ্টা করলাম যথাসময়ে সিলেবাস শেষ করার। 

অবশেষে উনিশের এপ্রিলে এইচএসসি এক্সামে বসলাম। শিক্ষকবৃন্দের অক্লান্ত শ্রম, দোয়া আর নিজের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় সম্মানজনক জিপিএ নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলাম। তারপর এডমিশন কোচিংয়ে ভর্তি হলাম। ঢাবি এবং জাবি এই দুইটি ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দেই এবং আল্লাহর রহমতে দুইটিতেই চান্স পাই। পরবর্তীতে পছন্দের সাবজেক্ট নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। শুরু হয় জীবনের আরেকটি নতুন অধ্যায়।

২০১৯ সালের ২৩ শে ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পন করি। নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ছাত্র হিসেবে শুরু করি ভার্সিটি লাইফ। যুক্ত হই সোসাইটি ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, JU Chess Society, Jahangirnagar University Career Club, ধ্বনি সহ নানান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে।

তবে আজ এই ভার্সিটি জীবনের ব্যাস্ত সময়েও কলেজের স্মৃতি হরহামেশাই মনে পড়ে যায়। সেই কলেজ বিল্ডিং, ক্যাফেটেরিয়া, পেপার ডেস্ক সব কিছু যেনো এখনো আমাকে ভীষণ টানে।এই কলেজের সাথে মিশে আছে আমার জীবনের এক সংগ্রামী অধ্যায়, এইখান থেকেই পেয়েছি জ্ঞানচর্চার প্রতি এক ব্যাকুল আগ্রহ, পেয়েছি ইট পাথরের নগরে মানিয়ে চলার শিক্ষা।

অবশেষে  আল্লাহর কাছে প্রার্থনা -ভালো থাকুক আমার কলেজ, ভালো থাকুন আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমন্ডলী, আর ড্যাফোডিল কলেজের শিক্ষার্থীদের সাফল্য, খ্যাতি, জ্ঞানের দ্যোতি ছড়িয়ে পড়ুক দেশ বিদেশ।

Mominul Huq (MH) Daffodil International College

পণপ্রথা ও তিনটি ছোটগল্প

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১ – ১৯৪১) বাংলা ছোটগল্পের জনক এবং বাংলা ছোটগল্পের শ্রেষ্ঠ শিল্পী। তিনি শ-খানেক ছোটগল্প লিখে বাংলা ছোটগল্প-সাহিত্যকে করেছেন সমৃদ্ধ ও শিখরস্পর্শী। সাহিত্যবোদ্ধাদের মতে, তিনি বিশ্বসেরা গল্পলেখকদের পঙক্তিভুক্ত হবার যোগ্য। সে-হিসেবে মার্কিন গল্পলেখক অ্যাডগার অ্যালেন পো (১৮০৯ – ১৮৪৯), ফরাসি গল্পলেখক গি দ্য মোপাসাঁ (১৮৫০- ১৮৯৩) ও রুশ গল্পলেখক আন্তন চেখভের (১৮৬০ – ১৯০৪) সঙ্গে তাঁর নামও স্মরণীয় হয়ে আছে। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত গল্প ‘ভিখারিণী’ (১৮৭৪ খ্রি.) । তাঁর প্রথম সার্থক ছোটগল্প 

‘দেনা-পাওনা’ (১৮৯১)। গল্পটি কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য-সম্পাদিত সাপ্তাহিক  ‘হিতবাদী’ (১৮৯১) পত্রিকায় মুদ্রিত হয় এবং পরে যথাক্রমে ‘গল্পসপ্তক’ও গল্পগুচ্ছে (৩য় খণ্ড) সংগৃহীত হয়। এর দুই দশক পরে তিনি লিখেছেন ‘হৈমন্তী’ (১৯১৪) ও ‘অপরিচিতা’ (১৯১৪)। এগুলো প্রমথ চৌধুরী-সম্পাদিত  ‘সবুজপত্র’(১৯১৪) পত্রিকায় মুদ্রিত হয় এবং পরে গল্পগুচ্ছে সংগৃহীত হয়।    

এখানে আলোচ্য তিনটিই পণপ্রথাকেন্দ্রিক ছোটগল্প। বিষয়গত ঐক্য থাকলেও এগুলোতে আছে নানা পার্থক্য ও বৈচিত্র্য। তাছাড়া এগুলোতে আছে গল্পলেখকের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের ছায়া। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে গল্পগুলোর একটা আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। 

‘দেনা-পাওনা’গল্পের গল্পকথক লেখক স্বয়ং। কিন্তু ‘হৈমন্তী’ও ‘অপরিচিতা’গল্পে গল্পবর্ণনা করেছে যথাক্রমে অপু ও অনুপম। এরা গল্পের নায়ক এবং গল্পকথক।  

‘অপরিচিতা’গল্পে অনুপম গল্পের শুরুতেই বর্ণনা দিচ্ছে, ‘আজ আমার বয়স সাতাশ মাত্র। এ জীবনটা না দৈর্ঘ্যের হিসাবে বড়, না গুণের হিসাবে। তবু ইহার একটু বিশেষ মূল্য আছে। ইহা সেই ফুলের মতো যাহার বুকের উপরে ভ্রমর আসিয়া বসিয়াছিল, এবং সেই পদক্ষেপের ইতিহাস তাহার জীবনের মাঝখানে ফলের মতো গুটি ধরিয়া উঠিয়াছে।’     

‘হৈমন্তী’গল্পে অপু বর্ণনা দিচ্ছে, ‘আমি ছিলাম বর, সুতরাং বিবাহ সম্বন্ধে আমার মত যাচাই করা অনাবশ্যক ছিল। আমার কাজ আমি করিয়াছি, এফ. এ. পাস করিয়া বৃত্তি পাইয়াছি। তাই প্রজাপতির দুই পক্ষ, বরপক্ষ ও কন্যাপক্ষ ঘন ঘন বিচলিত হইয়া উঠিল।’  

‘দেনা-পাওনা’বালিকাবধূ নিরুপমা (নিরু) ও তার ঋণগ্রস্ত অসহায় বাবা রামসুন্দর মিত্রের গল্প। গল্পটির নাম-নির্বাচনে চরিত্র নয়, পণপ্রথাই প্রাধান্য পেয়েছে।  ‘হৈমন্তী’ গল্পের প্রধান আকর্ষণ হৈমন্তী। তার বাবা গৌরীশঙ্করবাবু ঋষিতুল্য। অপুর ভাষ্যমতে, হৈমন্তী এযুগের সীতা আর সে হচ্ছে রামচন্দ্র। অপুর খেদোক্তি, ‘বুকের রক্ত দিয়া আমাকে যে একদিন দ্বিতীয় সীতা বিসর্জনের কাহিনী লিখিতে হইবে সে-কথা কে জানিত।’          

‘অপরিচিতা’গল্পের প্রধান আকর্ষণ কল্যাণী। সে-ই (কল্যাণীই) অনুপম ও তার তীর্থযাত্রী মায়ের কাছে অপরিচিতা ও রহস্যময়ী এক তরুণী, যে রেলগাড়িতে কিছুক্ষণের জন্য চোখের সামনে এসে ধরা দিয়েও অনেকখানি অধরা থেকে গেছে। অনুপমের ভাবনায় সে‘অর্ধেক রমণী’ ও ‘অর্ধেক কল্পনা’, এক স্বপ্নকন্যা (Dream Girl)।     

অনুপমের ভাষ্যমতে, ‘এই স্থুল অংশটাও (পণ) বিবাহের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’ আমাদের ধারণা, দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান। গুরুত্বহীন ও গৌণ অংশ হচ্ছে নববধূটি। উল্লেখযোগ্য যে, এগুলো গল্পলেখকের সমকালীন হিন্দুসমাজের যে সমাজ বিবেক ও মনুষ্যত্বশূন্য পরিচয় বহন করছে। আরো উল্লেখযোগ্য যে, গল্পলেখক তাঁর বড় ও মেজ মেয়েকে (রানি ও অতসী) পণসহ বাল্যবিবাহ দিয়েছেন এবং এদের বিবাহিত জীবন ছিল স্বল্পস্থায়ী ও দুর্বিষহ। এদেরই প্রতিচ্ছবি যেন নিরুপমা (নিরু) ও হৈমন্তী  (হৈম)। এরা  পণপ্রথার নির্মম বলি। কিন্তু  ‘অপরিচিতা’ গল্পে কল্যাণী ও তার বাবা শম্ভুনাথ সেন সতর্ক ও পরিণামদর্শী। এরা শ্বশুরগৃহে বধূ-নিগ্রহ থেকে মুক্তির একটা সরল পথ খুঁজে নিয়েছে। এরা নতুন যুগের বার্তাবহ।     
এটা সুবিদিত যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিসম্ভার বিশাল। এক্ষেত্রে তাঁর প্রধান অবলম্বন ছিল সাধুভাষা। আলোচ্য গল্পগুলোতেও সাধুভাষাই ব্যবহৃত হয়েছে।‘দেনা-পাওনা’ গল্পের বর্ণনাভঙ্গি সংযত ও যথাযথ।‘হৈমন্তী’ও‘অপরিচিতা’গল্পের বর্ণনাভঙ্গি কাব্যধর্মী। আমাদের ধারণা, আলোচ্য তিনটি ছোটগল্পের মধ্যে ‘হৈমন্তী -ই শ্রেষ্ঠ।

মমিনুল হক

সহকারী অধ্যাপক, বাংলা

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ

Daffodil College Alumni Students(Nirob Mojumder)

কর্মমুখর পৃথিবীর সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো নীরব মজুমদার

দূর থেকে আসাদ গেটে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটাকে চেনা চেনা লাগছিল। আরও একটু এগিয়ে   গেলাম- ওমা! এ তো আমাদের ছাত্র নীরব,নীরব মজুমদার।

তুমি এখানে?

ক্লাস করনি?

 নীরবের প্রত্যুক্তি -না ম্যাডাম।

 একটু রাগ হলো বৈকি। আজকে ক্লাসে ‘হৈমন্তী’ গল্প পড়ালাম-যৌতুকের বলী হৈমন্তী, And she is Dead কিন্তু ছেলেটা যে কিছুই জানতে পারলো না- তার কী হবে?

প্রত্যুত্তরে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলাম, নীরব কাছে এসে বিনীত স্বরে বললো,-

 -ম্যাডাম কোথায় যাবেন?    

 -যাবো তো মিরপুর, কেন?

 -গাড়ি এখনই এসে পড়বে। 

গাড়িতে উঠতে উঠতে বললাম,-কাল ক্লাস করবে। 

পরদিন সকালে ক্লাসে নীরবকে দেখলাম নীরবে বসে আছে; গুরুর নির্দেশ পালন করেছে। ক্লাস শেষে বের হয়ে আসছিলাম, পেছন থেকে নীরব বললো

 -ম্যাডাম, টিফিনে ছুটি লাগবে।  

-না ছুটি হবে না। নীরবের দু‘জন সতীর্থ ওর পাশে দাঁড়ানো ছিল। একে অপরের মুখের দিকে চাইতে লাগলো। বললাম -সবাই ক্লাসে যাও। সতীর্থ দু‘জন এগিয়ে এসে বললো

 – ম্যাডাম ও তো একটা ‘পার্টটাইম’ জব করে -তাই আরকি

– নীরবকে ডেকে নিয়ে যা জানলাম-আমি তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। 

চার ভাই এক বোনের সংসারে নীরব সবার বড়, বাবা মারা গিয়েছেন বছর পাচেক হলো। অসহায় মা,ভাই-বোনের সংসারের হালটা ছাত্রাবস্থায় তাই নীরবকেই শক্ত হাতে ধরতে হয়েছিলো।  ওকে ছুটি দিলাম। এরপর যখনই আসাদ গেটে গিয়েছি, আমার দু‘চোখ ওকেই খুঁজে বেড়াতো। দেখা হলেই এগিয়ে আসতো। কালো ব্যাগ-কখনো হাতে, কখনো বা কাঁধে ঝুলতো। নীরব ছুটি নিয়ে চলে গেল। 

ভাবনার অতল সাগরে আমি শুধু ভাবছিলাম-জীবন যুদ্ধ কতটা কঠিন, তা বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড়ালে বোঝা যায়, যেমনটা বুঝেছিলো নীরব। সিটিং সার্ভিস বাসের সামান্য টিকিট বিক্রেতা নীরব মজুমদার বুঝেছিলো- মানুষ নিজেই নিজের সৌভাগ্যের স্থপতি, তার সাফল্যের একনিষ্ঠ কারিগর। এ পৃথিবী অলস কর্মভীরুদের জন্য নয়। বুঝেছিলো- কর্মই জীবন, কর্মের মধ্যেই জীবনের প্রকৃত প্রতিষ্ঠা। পর মুখাপেক্ষী নয়,নীরব কর্মমুখর পৃথিবীর সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল নিজের ভাগ্যকে গড়ার দুর্লভ সুযোগ পেয়ে। সে এখন দেশের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘ওয়ালটন’ এর ‘অথরাইজড সার্ভিস পার্টনার’ হিসেবে ব্যবসা করছে।

জীবনের এই পর্যায়ে এসেও নীরব তার প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ড্যাফোডিল কলেজের কথা ভুলতে পারেনি। সে বার বার তার কলেজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। অনেক শিক্ষকের নাম সে কখনো ভুলতে পারবে না,যারা তাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। ভুলতে পারবে না কষ্টের মধ্যে সেই মধুময় অতীতকে। বর্তমানে তার নিজের একটা সংসার হয়েছে; তার ঘর আলো করে এসেছে একমাত্র মেয়ে সিদরাতুল নিহা। নীরবের পরিবারের জন্য ড্যাফোডিল পরিবারের পক্ষ থেকে একগুচ্ছ লাল গোলাপ শুভেচ্ছা।