ধূমপান ও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিলুফা ইয়াসমিন জুলাই ২১

ধূমপান ও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ধূমপান থেকে বিরত থাকুন, নিজের জীবনকে ভালোবাসুন

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর- আমরা সবাই জানি, এ সত্যটা জেনেও আমরা ধূমপান করি।

ধূমপানের কারনে যে ক্ষতি হয় সেটি হয় খুব ধীর গতিতে এবং শরীরের ভিতরে হয়, এজন্য

আমরা এর ক্ষতিটা খুব একটা বুঝতে পারি না। ধুমপানের কারনে শুধু যে আমি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত  

হচ্ছি তা নয়, আমার আশেপাশে যারা আছে, তারাও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। যেমন- আমি আমার

সন্তানকে আমার জীবনের চেয়েও ভালবাসি অথচ আমি জানিনা আমার আদরের সোনামনি কতটা

ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমি ধূমপান করার কারনে। অনেক সময় অনেক বাচ্চা নিউমোনিয়া নিয়ে

জন্মগ্রহণ করে ,বেশিরভাগ বাচ্চার এই রোগের কারন ধূমপান করা বাবা, এঁটা অনেক  

পরিসংখ্যানে বেরিয়ে এসেছে। শুধু তাই নয়, বাচ্চাদের ফুসফুসের সমস্যা, হার্টের সমস্যা,

কিডনির সমস্যা ইত্যাদি নানাবিধ সমস্যাও এই কারনে হয়।

আমরা যারা মুসলমান তাদের জন্য ধূমপান করা হারাম ( সূরা আল আরাত) এবং কবিরা গুনাহ (

কারন আমরা এটা প্রতিনিয়ত করছি)। অনেকে আবার বলেন, আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি

আল্লাহ আমাকে মাফ করে দিবেন- হ্যা আল্লাহ কাকে কি দিয়ে মাফ করবেন সেটি মহান আল্লাহ

তালাহই যানেন, তবে নামাজ আদায় করলে সেটি আমাদের পূন্যের পাল্লায় যাবে, আর ধূমপান

করলে গুনাহের পাল্লায় যাবে। তবে গুনাহের কাজ করলে মানুষ ধীরে ধীরে সেদিকেই ধাবিত হয়

এবং পূন্যের কাজ ছেড়ে দেয়।

আমরা যারা ধূমপান করি ধূমপানের ফলে এগুলো দেহের ভিতরে বিশেষ করে ফুসফুসে প্রবেশ

করে দেহকে অসুস্থ করতে শুরু করে । সিগারেটে যে রাসায়নিক উপাদান থাকে তার মধ্যে

নিকোটিন, আর্সেনিক, মিথেন, অ্যামোনিয়া, কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন, সায়ানাইড  

ইত্যাদি প্রধান। একজন অধুমপায়ী যে কাজ চটজলদি করতে পারে, সে কাজ ধূমপায়ীর জন্য

অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও সময় সাপেক্ষ প্রমানিত হয়। ধুমপানের কারনে COPD রোগ হয় এটি

ফুসফুসের রোগ। যারা ধুমপান করেন তারা সাধারনত এই রোগটি সম্পর্কে যানেন না, কারন

তারা যদি জানতেন তাহলে অবশ্যই এটি ছেড়ে দিতেন। অনেকের ধারনা ধুমপানের কারনে

ক্যান্সার হয়, এটি সত্য কথা কিন্তু তার চেয়েও মারাত্মক রোগ হলো COPD ২০১৯ সালে

WHO এর পরিসংখ্যানে

১ নং-হার্ট ডিজিজ

২ নং – স্ট্রোক

৩ নং- ক্যান্সার

৪ নং- COPD

COPD – এটি ২০২০সালে তিন নম্বরে সংক্রমনের দিকে এগিয়ে এসেছে, এটি মারন ব্যাধি এবং

এটি সৃস্টি হয় ধুমপানের কারনে। এটি চিকিৎসায় ভালো হয় না এবং এটি হলে মানুষ ধীরে ধীরে

মৃতে্যুর দিকে ঢলে পড়ে। এটি সিস্টেমিক ডিজিজ। এটির কারনে শরীরের সব অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়,

শরীরে পানি চলে আসে, হার্ট অ্যাটাক হয়, হার্ট ফেইলর হয়, কান্সার হয়।

আসুন আমরা সবাই ধূমপান পরিহার করি, COPD থেকে মুক্ত থাকি এবং নিজের জীবনকে

ভালবাসি।

নিলুফা ইয়াসমিন

সিনিয়র লেকচারার

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ

Tags: No tags

Comments are closed.